স্বাস্থ্য দপ্তরে চাকরির নামে প্রতারণায় ধৃত
দাবদাহ লাইভ, বৈশাখী সাহা, উত্তর ২৪ পরগনাঃ স্বাস্থ্য দপ্তরে চাকরি দেবার নামে কয়েক লক্ষ টাকা নিলেও মেলেনি চাকরি। পুলিশকে বিষয়টি জানিয়েও মেলেনি সুরাহা। শেষমেশ “দিদিকে বলো”- নম্বরে কল করে অভিযোগ করার পর তৎপর হয়ে ওঠে পুলিশ। গ্রেফতার হয় প্রতারক। উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বারাসাত মহকুমার দেগঙ্গা ব্লকের বেঁড়াচাপা এলাকায় ঘটনাটি ঘটে। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, স্বাস্থ্য দপ্তরে চাকরি দেবার নাম করে বেঁড়াচাপার বাসিন্দা ইন্দাস মোদী নামে এক ব্যাক্তি বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন মানুষের কাছ থেকে কয়েক লক্ষ টাকা নেয়। কিন্তু চাকরি পায়নি কেউ।টাকা ফেরতের দাবি জানালে ইন্দাস প্রাণনাশের হুমকি দেয় বলে অভিযোগ। স্থানীয় অভিজিৎ কাহার নামে প্রতারিত এক যুবকের কথায়, সে ” দিদিকে বলো”- নম্বরে কল করে অভিযোগ জানায় এই মর্মে যে, স্বাস্থ্য দপ্তরে চাকরি দেবার নামে ইন্দাস মোদী তার কাছ থেকে আট লক্ষ টাকা নেয়। বেশ কয়েক মাস কেটে গেলেও চাকরি পায়নি সে। পরে ইন্দাসের কাছে টাকা ফেরতের দাবি জানালে তাঁকে প্রাণনাশের হুমকি দেয় প্রতারক ইন্দাস। দেগঙ্গা থানায় এ বিষয়ে অভিযোগ জানানো সত্বেও পুলিশ বিষয়টিকে কোনো গুরুত্ব দেয়নি। তাই গত মাসে “দিদিকে বলো” নম্বরে কল করে বিষয়টি জানায় অভিজিৎ। এরপর নড়েচড়ে বসে পুলিশ প্রশাসন। অভিযোগকারীকে থানায় ডেকে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করতে বলে, ও তা জমা নেয় দেগঙ্গা থানার পুলিশ। ইন্দাস মোদীর ওই কর্মের সাথে আরো ৫ জন যুক্ত আছে বলে দাবি অভিযোগকারীর। ওই অভিযোগের ভিত্তিতে বেড়াচাঁপা থেকে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে দেগঙ্গা থানার পুলিশ। স্থানীয়দের কথায় ওই ঘটনায় অভিযোগকারী ছাড়াও আরো দশ জনের কাছ থেকে চাকরি দেওয়ার নাম করে লক্ষ লক্ষ টাকা নিয়ে প্রতারণা করেছে অভিযুক্ত। যদিও সেই অভিযোগ পুরোপুরি অস্বীকার করেছে অভিযুক্ত। প্রতারণা করার অভিযোগে ধৃতের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট ধারায় মামলা রুজু করার পাশাপাশি পুলিশি হেফাজতের আবেদন জানিয়ে দেগঙ্গা থানার পুলিশের পক্ষ থেকে ধৃতকে বারাসাত আদালতে পেশ করা হলে ৭ দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক। ধৃতকে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে ইতিমধ্যেই জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে পুলিশ। ধৃত কতদিন যাবত ওই কর্মের সাথে যুক্ত, চাকরির নামে ওই বিপুল পরিমান টাকা নিয়ে সে কি করতো, তাঁর ওই কর্মকান্ডের সাথে আর কে বা কারা কিভাবে যুক্ত, ওই প্রতারণা চক্রের মূল পান্ডাই বা কে? সম্পূর্ণ ঘটনার তদন্তে নেমেছে দেগঙ্গা থানার পুলিশ। তদন্ত সাপেক্ষে সমস্ত প্রশ্নের উত্তর পাওয়া সম্ভব হবে এবং দোষীরা তাদের কর্মফল হিসেবে উপযুক্ত শাস্তিই পাবে বলে জানায় পুলিশ। ওই ঘটনায় পুলিশের ভুমিকা নিয়েও উঠেছে প্রশ্ন। প্রাণনাশের হুমকি পাওয়ার পর প্রতারিত যুবক থানায় বিষয়টি জানানো সত্বেও পুলিশ কেন কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ না করে নিরব দর্শকের ভুমিকা পালন করেছে, পুলিশকে বিষয়টি জানানোর পরেও কেন যুবক “দিদিকে বলো”- নম্বরে কল করতে বাধ্য হয়েছে- আর তারপরই পুলিশ তদন্ত ভার গ্রহণ করেছে, তবে কি ওই ঘটনার সাথে কোনো না কোনোভাবে রয়েছে পুলিশি যোগসাজশ? সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা তাহলে কোথায়- প্রশ্ন স্থানীয় ওয়াকিবহাল মহলের।

















