যাত্রী সুবিধার্থে পুজোয় রাত ভোর ট্রেন ও হকার মুক্ত শিয়ালদহ
দাবদাহ লাইভ, বৈশাখী সাহা, কলকাতাঃ হাতে গোনা কয়েকদিন পর অনুষ্ঠিত হবে কালী পূজো। ওই সময় পূজো দেখতে বের হওয়া উৎসুক মানুষের ভীড় সামলাতে এবং সেই সময় কোনোরূপ অপ্রীতিকর ঘটনা যাতে না ঘটে, যাত্রী সুরক্ষার কথা মাথায় রেখে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ ব্যবস্থা গ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নেয় পূর্ব রেলের শিয়ালদহ ডিভিশন। এ বিষয়ে শিয়ালদহ ডিভিশনাল রেলওয়ে ম্যানেজার ‘রাজিব সাক্সেনা’ জানান, উৎসব মুখর দিনগুলোতে সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ আপ লোকাল ট্রেন অর্থাৎ নৈহাটি, রানাঘাট, কৃষ্ণনগর, গেদে, বহরমপুর কোর্ট ও লালগোলা- বিধান নগর ও দমদম স্টেশনের ১ নম্বর প্ল্যাটফর্ম দিয়ে ছাড়বে। মাঝেরহাট ও বালিগঞ্জ হয়ে যাতায়াতকারী দক্ষিণ শাখার সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ আপ লোকাল ট্রেন গুলি শুধুমাত্র ২ নম্বর প্ল্যাটফর্ম দিয়েই যাতায়াত করবে। বারাসাতের কালী পুজো খুব বিখ্যাত হওয়ায়, বিপুল সংখ্যক মানুষ ট্রেনে চেপেই সেখানে যান প্রতিমা দর্শন করতে। আর বিধান নগর ও দমদম স্টেশন থেকে বহু যাত্রীও বারাসাতগামী ট্রেন ধরেন। সেই কথা মাথায় রেখে রেলের তরফে জানানো হয়, দর্শনার্থীদের সুবিধার্থে বারাসাত, বনগাঁ, হাসনাবাদ, ডানকুনি আপ লোকাল ছাড়াও দূরপাল্লার সমস্ত মেইল, এক্সপ্রেস ও প্যাসেঞ্জার ট্রেন শুধুমাত্র দমদম ও বিধান নগর স্টেশন এর ২ নম্বর প্ল্যাটফর্ম দিয়েই যাতায়াত করবে। কালী পূজোর দিন সরকারি ছুটি থাকলেও প্রতিদিনের ন্যায় চলবে সমস্ত লোকাল ট্রেন। ২০ থেকে ২৪ অক্টোবর পর্যন্ত ওই ৫ দিন কোনও লোকাল ট্রেন গ্যালোপিন থাকবে না। ট্রেনগুলি সমস্ত স্টেশনেই থামবে। ওই নিয়ম চালু করতে গিয়ে কোনও ট্রেন দেরিতে চলতে পারে। বিশেষ কারণবশত কোনও ট্রেন বাতিল করতে হলে, তা আগে থেকে জানিয়ে দেওয়া হবে। ওই সময় শিয়ালদহ স্টেশন চত্বর সম্পূর্ণ হকার মুক্ত থাকবে বলে জানায় রেল কর্তৃপক্ষ। রেলের তরফে এও জানানো হয়েছে, কোনও কারনে ঘোষিত প্ল্যাটফর্মের বদল করতে হলে, তা বহু পূর্বেই জানানো হবে। এছাড়াও ওই সময় অতিরিক্ত ভীড় ও যান্ত্রিক সমস্যায় যাত্রীরা যাতে কোনরূপ বিপাকে না পড়েন, তার জন্য রেলের পক্ষ থেকে বেশ কিছু অতিরিক্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। জানানো হয়েছে, সকাল ও সন্ধ্যার ভীড় সামলাতে ২০ থেকে ২৪ অক্টোবর মোট ৫ দিন শিয়ালদহ স্টেশনের প্রতিটি টিকিট কাউন্টার ২৪ ঘন্টাই চালু থাকবে। দূর্গা পূজোর ন্যায় কালী পূজোতেও শিয়ালদহ স্টেশনে থাকবে অতিরিক্ত ১০ টি মোবাইল ইউটিএস এবং ১৭ টি এটিএম। যাত্রী-সুবিধা নিশ্চিত করার জন্য একজন অতিরিক্ত সার্ভিস ইঞ্জিনিয়ারও সবসময় মোতায়েন থাকবে। বিশেষ কাউন্টারে কাজ করার জন্য অস্থায়ী বুকিং ক্লার্ক ইতিমধ্যেই নিয়োগ করা হয়েছে। কালী পূজোর দিনগুলোতে বিকাল ৫ টা থেকে সকাল ৭ টা পর্যন্ত ট্রলি চলাচলও বন্ধ থাকবে। যাত্রী সুবিধার্থে দুর্গাপুজোর পূর্বেই ১ নম্বর প্ল্যাটফর্মের প্রফুল্ল দ্বার খুলে দেওয়া হয়েছে। সেই গেট দিয়ে যাত্রীরা অনায়াসে রানাঘাট, কৃষ্ণনগর, কল্যাণী, নৈহাটি ও ব্যারাকপুর লাইনের ট্রেনে উঠতে পারবেন। কালী পূজোর ৫ দিন সারারাত্র ব্যাপী শিয়ালদহ থেকে ডানকুনি, বারাসাত ও নৈহাটি রুটে চলবে ট্রেন। ব্যস্ত লেভেল ক্রসিংগুলোতে বিশেষ আরপিএফ মোতায়েন থাকবে। স্বেচ্ছাসেবকরা ঝুঁকিপূর্ণ ক্রসিং গেট গুলিতে নজর রাখবেন। শিয়ালদহ, দমদম ও কলকাতার মতো ব্যস্ত স্টেশন গুলিতে খোলা হবে “আমি আপনাকে সাহায্য করতে পারি” নামক বুথ। সেখান থেকে যাত্রীরা হেল্পলাইন নম্বর এবং জরুরী পরিষেবার ফোন নম্বরগুলো জানতে পারবেন। এছাড়াও শিয়ালদহ স্টেশনের বাইরে থাকা পার্কিং এরিয়ার মধ্যে ৩০০ বর্গমিটার এরিয়া শেড দিয়ে ঢেকে, সেটা হোল্ডিং এরিয়া হিসেবে ব্যবহার করা হবে। বিশেষ করে দমদম, বারাসাত, নৈহাটি, বিধান নগর রোড- এই চারটি স্টেশনে অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে বিশেষ নজর রাখবে রেল। বলা যায়- কালী পূজো বা দীপাবলির সময় ভীড় নিয়ন্ত্রণ, যাত্রী সাধারণের নিরাপত্তা ও স্বাচ্ছন্দ্যে যাতায়াতের জন্য পূর্ব রেলের শিয়ালদহ ডিভিশন সম্পূর্ণভাবে প্রস্তুত।
নিউজ এক ঝলকে
যাত্রী সুবিধার্থে পুজোয় রাত ভোর ট্রেন ও হকার মুক্ত শিয়ালদহ
93%

















