ধ্বংসাত্মক হিংস্রতায় কি স্বৈরাচারী উচ্ছেদ!
শমীন্দ্র ঘোষ
সাম্প্রতিক কালে সরকার বিরোধী যে আন্দোনল বাংলাদেশে সংগঠিত হয়েছে তা’ গোটা এশিয়া তথা দক্ষিণ এশিয়ায় প্রভাব পড়ার সম্ভাবনাময় দৃষ্টান্তে ও মানব প্রজাতির মানবিকতাময় মনন শক্তি গড়ে তুলতে এক বিশ্লেষণমুখী প্রতিবেদনের প্রয়াস। কারণ হিসাবে বলা যেতে পারে, বিশেষ করে বাংলাদেশ আর ভারতের মধ্যে আমরা একাত্ববোধ খুঁজে পাই। আর তাই আচার আচরণে, সাংষ্কৃতিক মানসিকতায় যে কোন ধ্বংসাত্মক ঘটনা আমাদের উদ্বিগ্ন করে তোলে। ফলে, সে বিষয়ে আমাদের মানবিকতার আঘাতেও উদ্বেলিত হয়ে উঠি। তাই মনে প্রশ্ন জাগে? এত হিংস্রতা কেন? কেন এত্ত ধ্বংসযজ্ঞ? কেন এত হত্যা? স্বৈরাচার উচ্ছেদ করতে হিংস্র, ধ্বংসাত্মক আন্দোলন গড়ে তুলতে হয়; এটা কোন্ নীতি, কোন্ আদর্শ, কে শেখালো? এটা কীসের রাজনীতি? কার সম্পদ, কে ধ্বংস করলো? ১৭ কোটির ১ কোটি মানুষও কি সত্যিই নৈরাজ্যবাদী, হিংস্র, ধ্বংসকামী? নাকি সংখ্যাগরিষ্ঠ এমনটা? প্রায় ১,০০০ কোটি টাকার সম্পদ ধ্বংস করা হল; যা কিনা বাংলাদেশের মানুষেরই করের টাকায় গড়া! যে বা যারা ধ্বংস করলো, তাদেরই কর দিতে হয় এবং কর দিতে হবে পুনর্নির্মাণ করতে হলে। প্রায় ১০০০ মানুষ নিহত; প্রায় ১০,০০০ মানুষ আহত; ভুক্তভোগী কয়েক লক্ষ মানুষ! আশংকায় দিন গুনছে সংখ্যালঘু এবং দেশের প্রায় সমস্ত মানুষ। এমন অবস্থা একটি আজাইড়া বিষয়ের জন্যে; ফল নেতিবাচক। তাহলে কেন এমনটা হল? কেন এসব ভাবলো না? যুক্তিবুদ্ধি, বিচক্ষণতা কেন লোপ পেল? শিক্ষা, মেধা কোথায় গেল? নীতিবোধ কোথায় গেল? লক্ষ্যনীয় বিষয়, বাংলাদেশে কোনো আন্দোলন হলেই বা কিছু একটা গোলমাল হলেই দেখা যায় ভাঙচুর, আগুন, খুনখামারি ইত্যাদি হিংস্রতা চলে, ধ্বংসযজ্ঞ চলে। এই একই চিত্র পশ্চিমবঙ্গের মুসলমান অধ্যুষিত অঞ্চলে বেশি দেখা যায়। মূলত উপমহাদেশেই এমন ধ্বংসযজ্ঞ বেশি দেখা যায়। আর, এসবের বেশিরভাগই ইসলামী ধর্মান্ধদের দ্বারা; বাকিটা ধর্মান্ধ হিন্দুত্বের দ্বারা সংঘঠিত হয়। জরুরি বিষয় হল, সৌদি, আমিরশাহী, তুরস্ক, ইরান, ইউরোপের দেশগুলো, আমেরিকা মহাদেশের দেশগুলো, কাজাখ, উজবেক, আর্মেনিয়া ইত্যাদি দেশে মুসলমানেরা কিন্তু এমন বেপরোয়া, উশৃঙ্খল, হিংস্র, ধ্বংসাত্মক নয়। কিন্তু কেন বাংলাদেশের এহেন আচরণ? সমাজ-মনস্তাত্ত্বিক ব্যাখ্যায় এমন আচরণের যথার্থ কারণ জানা গেছে। মনস্তাত্ত্বিক ব্যাখ্যা ও সমাজতাত্ত্বিক ব্যাখ্যা বা সমাজ-মনস্তাত্ত্বিক ব্যাখ্যা —
ব্যক্তির ক্ষেত্রেও দেখা যায় যে, বাড়িতে ঝগড়া বিবাদে ব্যক্তিটি নানান জিনিসপত্র ভাঙচুর করে। সেই পরিবারের সকলে করে না, কিন্তু কেউ কেউ এমন আচরণ করে। এর কারণ, অবদমিত ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ, এই ক্ষোভ নানান ধরনের, এরসঙ্গে খু*নি মানসিকতা আছে; এখানে ভাঙচুর করা বস্তুটি আসল লক্ষ্যের প্রতীক; যেখানে কিছু করার অপারগতা, সেখানে প্রতীকের ব্যবহার। ক্ষোভ বেরোলেই মন হালকা হয়। এরই সঙ্গে আছে নানান মনোবিকলন ও মগজের অবস্থা —, আত্মপরিচয়ের অভাব, অবদমিত বাসনা বা আকাঙ্ক্ষা, অহংকার, হীনমন্যতা, অবদমিত ভয় থেকে ভীরুতা, অবদমিত যৌন চেতনার অন্তর্দ্বন্দ্ব বা অসফল দ্বান্দ্বিক অবস্থা, ধর্ষকাম, মর্ষকামের অবদমন জনিত ক্ষোভ, অতিরিক্ত উচ্চমন্যতা, অতি আবেগপ্রবণ মন, নৈরাজ্যবাদী চেতনা, যুক্তিবোধের অভাব, শৃঙ্খলাবোধের অভাব, স্থূল মগজ, চাপ সহ্য করার ক্ষমতা কম থাকা, জটিলতা বোঝার ক্ষমতা কম থাকা, তলিয়ে ভাবার ক্ষমতা কম থাকা, শিক্ষা নিম্ন বা নেই, অর্ধশিক্ষা, নিম্ন মেধা, নিম্ন বোধ, স্বল্প যুক্তিবোধ, স্বল্প বুদ্ধি – কিন্তু ধূর্ত, কাল্পনিক বিশ্বাস, আনন্দ বোধ কম থাকা এবং ধারাবাহিক খুশিতে না থাকা, কড়া শাসন, ধর্মীয় গোঁড়ামি, ভক্তি, অমানবিক নিয়মতন্ত্রের লাগাতার অধীনতা এবং অপর কাউকে সেই নিয়মতান্ত্রিকতার বাইরে দেখার কারণে বিপুল অন্তর্দ্বন্দ্ব এবং প্রবল চাপ এবং তজ্জনিত অবদমিত ক্ষোভ, লোভ, ক্রোধ — যা প্রবৃত্তিগত হলেও নিয়ন্ত্রণের চর্চা না থাকায় লাগামছাড়া এবং অবদমিত থাকে ইত্যাদি। এমন এক বা একাধিক মানসিক বৈশিষ্ট্যের কারণেই মানুষ হিংস্র হয়, হয়ে ওঠে; এমনকী হওয়ানোও যায়। আবার একটি কারণ থেকে আরেকটি বা একাধিক বৈশিষ্ট্য গড়ে ওঠে। এতে ইন্ধন দেয় অনুকূল প্রতিবেশ — শিক্ষা, রাজনৈতিক অবস্থা, প্রচার, সম মানসিকতার সংখ্যাগরিষ্ঠতা ও সমর্থন, ভিড়, আইনি শিথিলতা বা অত্যন্ত কড়া ব্যবস্থা, লাগাতার নানান বঞ্চনা ইত্যাদি বহু পারিবারিক, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় কারণ এমন আচরণ গড়ে তোলার অনুকূল। ফলে, আচরণের অসঙ্গতি বেড়ে যায়। আবার এটাই লাগাতার বা মাঝে মাঝে চর্চার ফলে বাড়তে থাকে। একসময় অভ্যাসে পরিণত হয়। একই সঙ্গে হিস্টিরিক করে দেওয়া — লাগাতার প্রচারের ফলে স্থূল মগজ হিস্টিরিক হয়ে ওঠে এবং যুক্তিবুদ্ধি হারিয়ে ফেলে নানান অসংযত আচরণ করে। এটা ব্যক্তি ছেড়ে জনতার মধ্যে হলে গণ হিস্টিরিয়া বলা হয়। হিস্টিরিয়ায় আক্রান্ত ব্যক্তি যা খুশি তাই করতে পারে — যা তার অবদমিত আছে, তেমনি যা প্রচারিত হয়ে মগজে গেঁথে দেওয়া হয়েছে এবং যা যা আগে দেখে, শুনে অভ্যস্ত হয়েছে, মুখস্থ করেছিল। যেমন, ভরে পড়া, নানান দেবদেবী হয়ে ওঠা, ভূতে ধরা, দাঁত দিয়ে ভারী ও ভরা বিশাল কলসি তুলে দৌড় ইত্যাদি নানান অস্বাভাবিক আচরণ একসময়ে প্রচুর দেখা যেত। এখন শিক্ষার আলো ছড়ানোতে ও বিজ্ঞান চেতনার ফলে ওসব একদম কমে গেছে। তবে এমন বৈশিষ্ট্য শিক্ষার সুযোগ না পাওয়া, নিম্নবিত্ত পরিবারের দেখা যায়; একটি দৃষ্টান্ত — মতুয়াদের একাংশের মধ্যে, হিন্দু উদ্বাস্তু এক বিরাট অংশের মধ্যে, নিম্নবিত্ত ইসলামী, হিন্দু ইত্যাদি পরিবারে ও সমাজে এমন আচরণ বেশি দেখা যায় এখনও। আমরা গণপ্রহারে মৃত্যু হতে দেখেছি। কিন্তু এই গণ হিসেবে যারা প্রহার করলো, তারা কি আদৌ সাহসী, শক্তিধর? নাহ, এদের ৯৯%ই ভীরু ধরনের মন মানসিকতার। আর, যেহেতু এদের বিশ্বাস আছে – অপরাধ করলেও ধরা পড়ার ভয় নেই উন্মত্ত ভিড়ের জন্যে। তাই যে ব্যক্তি ঘরে বাচ্চাকে চড় মারে না, সেও ভিড়ের মধ্যে হাত চালিয়ে দিল ভিড়ের উন্মত্ত ইন্ধনে। তারপরে বেপাত্তা হয়ে গেল। এটাই ব্যক্তি – পরিবার ছেড়ে বৃহত্তর সমাজে এসে দেখলে একই ঘটনা/ আচরণ দেখা যাবে। শুধু মাত্রার পার্থক্য হবে। ঘরে বাটি ছুঁড়ে ভেঙেছে; তো এখানে রাস্তার বেড়া তুলে ফেলে ভেঙে দিল, কী সেতু ভেঙে দিল। সঠিক মানসিক চিকিৎসায় এই মনোবিকলন থেকে মুক্তি পাওয়া যায়; ঝকঝকে, ফুরফুরে, সদানন্দময় মন/ মগজ গড়ে তোলা সম্ভব; এবং যুক্তিবাদী চেতনা আত্মস্থ করে বুদ্ধিধর, ধারালো ও তীক্ষ্ণ বুদ্ধির, মেধাবী, জ্ঞানী, সৃজনশীল, বৈচিত্রময় হয়ে ওঠা যায়। মন হয়ে উঠবে শক্তিশালী। তেমনি সমাজ থেকেও এমন আচরণ নির্মূল করা যায় একই পদ্ধতিতে এবং অবশ্যই প্রতিবেশের পরিচর্যায় — যুক্তিবাদী চেতনার গঠন করে, প্রচারে; সাংস্কৃতিক আন্দোলন করে। বাঙালির গড় মানসিকতা এমনিতেই শিকড়হীন, উদ্বাস্তু; এর কারণ ভাষা-সাংস্কৃতিক আত্মপরিচয়ের অভাব, নিজের প্রাচীন ইতিহাস এবং উৎস সম্বন্ধে অজ্ঞতা। তার ওপরে মিথ্যা প্রচার, কাল্পনিক প্রচার ও বিশ্বাস; ভাববাদী ও ভোগবাদী প্রচার ও বিশ্বাস; ধর্মের বিভাজনের ফলে একটা নৈরাজ্যবাদী মানসিকতা এবং বিচ্ছিন্নতা বোধ কাজ করে অবচেতনে। ফলে, সবসময় হাতড়ে বেড়ায় সামাজিক আত্মপরিচয় । ভারতের ক্ষেত্রে বেশি মানুষ থাকায় মানসিক চাপ কম হয়; কিছুটা থাকলেও তা প্রশমিত হয়ে জল। কিন্তু বাংলাদেশ একাকীত্বে বেশি ভোগে। একেই “মধ্যবর্তী ঘেরা অঞ্চল” (বাফার স্টেট); তায় ইসলাম নিয়েই অনবরত দ্বন্দ্ব এবং ভারত নিয়েও দ্বন্দ্ব বিরোধ; এরসঙ্গে হীনমন্যতা অত্যন্ত বেশি। তার ওপরে ইসলামী বাঙালির মধ্যে এই মনোবিকলন বৈশিষ্ট্যে-র মন মানসিকতা অত্যন্ত বেশি সংখ্যায় এবং গভীরভাবে আছে; এর কারণও একই। তেমনি সমগ্র পূর্বভারতের মুসলমানদিগের মধ্যেও এই একই মন মানসিকতা ও তজ্জনিত আচরণ লক্ষ্যনীয়। ফলে, সামান্য গোলমাল হলেই, ইন্ধন পেলেই হিংস্র হয়ে ওঠে। আর যেহেতু বিশ্বাস যে, এসবের ফলে ধরা পড়ার ভয় নেই; তাই লাগামছাড়া, বেপরোয়া, উশৃঙ্খল হয়ে ওঠে। সমাজ-মনস্তাত্ত্বিক ব্যাখ্যায় অঞ্চলে হয়; হিন্দুত্ববাদীদের দ্বারাও এমনটা হয়। এই বিষয়ে ১৯৯২-র বাবরি মসজিদ ধ্বংস একটি স্মরণীয় উদাহরণ। বাংলাদেশের সদ্য অর্ধসমাপ্ত কোটা বিরোধী হিংস্রতার কারণ উপরের মনস্তাত্ত্বিক কারণে বিবৃত। বাংলাদেশের বাঙালি কতটা মুসলমান আর কতটা বাঙালি এই নিয়ে প্রতি মুহূর্তে এবং আজীবন দ্বন্দ্বে এবং ধন্দে কাটায়; যা অস্বস্তিকর; এর প্রভাব পড়ে অবচেতনে। আচরণে অসঙ্গতি দেখা যায়। এর ফল মারাত্মক হয়, হচ্ছে এবং হয়ে চলেছে। ফলে, গোলমাল হইলেই ধ্বংস এবং লুঠপাটই যেন মূল কাজ হয়ে দাঁড়ায়। ১৯৪৬ সাল থেকে আজ পর্যন্ত প্রতিটি প্রতিবাদ, আন্দোলন, দাঙ্গা, গোলমাল ইত্যাদি এর জ্বলন্ত সাক্ষ্য বহন করে বলে অধিকাংশ বিদ্বজনের ধারণা। সাম্প্রতিক আরেকটি সম্ভাবনাময় দৃষ্টান্ত — যা বাংলাদেশের জনৈক ফুয়াদ নামক এক তথাকথিত উকিল ভিডিও বক্তব্যে জানাচ্ছে যে, ভারতের ট্রেন বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে ৭০০ বা ১০০০ কিমি যাত্রা করে নির্বিঘ্নে চলবে, এইটা যদি ভারত সরকার বিশ্বাস করে, তাহলে তারা মূর্খের স্বর্গে বাস করছে। বাংলাদেশের রাজনীতিতে ট্রেন ধ্বংসের, আগুন লাগানোর বহু উদাহরণ / ইতিহাস আছে। অর্থাৎ, ট্রেন ধ্বংস করবে, এমন উস্কানি দিয়ে রাখলো প্রথমেই। অর্থাৎ ধ্বংসের এবং হিস্টিরিক হওয়ার অনুকূল পরিবেশ তৈরি করা হচ্ছে। অথচ, ইতিবাচক ও গঠনমূলক মানবিক কিছু শিখানো হল না; যেমন ইউরোপে এমন ট্রেন চলে, করিডোর বানানোও হয়; আমেরিকা মহাদেশের কানাডা থেকে চিলির দক্ষিণ প্রান্তে পর্যন্ত মহাসড়ক আছে। কিন্তু, ওইসব দেশগুলোয় বাংলাদেশী লুম্পেন ইসলামী ধর্মান্ধ অসুস্থ মানুষদের মতন উস্কানি দিয়ে ধ্বংসাত্মক কাজ করা হয় না। এসব বোঝা ও বোঝানো সেই দেশের শিক্ষিত, মেধাবী মানুষদের আবশ্যক কর্তব্য। কিন্তু, আগামীদিনে যখন কোনো সঠিক, নৈতিক ইস্যু খাড়া করে আন্দোলন করা হবে; তখন যদি এমন ট্রেন পুড়ানোর মতন হিংস্র, ধ্বংসাত্মক কাজ করা হয়, সেই সময়ে সিংহভাগ মানুষ ভুলেই যাবে যে, এমন একটা উস্কানি বহু আগেই বারেবারে দেওয়া হয়েছিল; যা প্রভাব বিস্তার করেছিল কিছু মানুষকে, এবং ধীরে ধীরে অবচেতন মনকে তৈরি করা হয়েছিল ধ্বংসযজ্ঞে নামার জন্যে।
শিক্ষণীয় আন্দোলনের দৃষ্টান্ত —
দিল্লির কৃষক আন্দোলনে ২৫টির বেশি গোষ্ঠী ছিল; তাদের নানান মতপার্থক্য থাকলেও একজোট একই ইস্যুতে ১ বছরের বেশি সময় ধরে আন্দোলন করেছিল। প্রায় ১০ লক্ষ কৃষক এবং তাদের পরিবার আন্দোলনে শামিল হয়েছিল। পথ অবরোধ, অবস্থান বিক্ষোভ, ট্রাক্টর মিছিল করেছিল; সারাদিন রাত নানান স্লোগান উঠেছে, গানবাজনা চলেছে, প্রতিবাদে মুখর ছিল বিশাল অঞ্চল। কিন্তু, সেই অঞ্চল জুড়ে কোনো হিংসাত্মক ঘটনা তারা ঘটায়নি। অন্যত্র তারা আদানি আম্বানিদের সম্পত্তির ক্ষতি করেছিল মাত্র; কিন্তু সরকারি সম্পত্তির কোনো ক্ষতি করেনি। এটা শিক্ষণীয়।
শিক্ষণীয় বিপ্লব —
স্বৈরাচারী শাসকের বিরুদ্ধে তিনটি বিপ্লব — লেনিনের রাশিয়া বিপ্লব, মাওয়ের চীন বিপ্লব, কাস্ত্রোর কিউবা বিপ্লবে কিন্তু এমন ধ্বংসাত্মক আন্দোলন করতে হয়নি, যা বাংলাদেশে সদ্য করা হল। কিন্তু বিপ্লবীরা সফল হয়েছিলেন। অন্যদিকে বাংলাদেশে ধ্বংসাত্মক, হিংস্র দাঙ্গা করা হল এবং ফল সম্পূর্ণ নেতিবাচক এবং অসফল।অতএব, বাকি সিদ্ধান্ত আপনারা মিলিয়ে নিন ছোটো ছোটো করে। প্রয়োজনে যেকোনো মনোবিদ, মনোবিদ্যার গবেষক, সমাজতাত্ত্বিক প্রমুখের পরামর্শ নিন এই প্রতিবেদন দেখিয়ে; যদি তিনি/ তাঁরা এই প্রতিবেদনের সঙ্গে ৮০% বা তার বেশি ক্ষেত্রে একমত না হন, তাহলে এই প্রতিবেদন সংশোধন করবো, কথা দিলাম।
সমাধান :
(১) এই মুহূর্তে সরকারের অনেক জরুরি কাজের মধ্যে একটি জরুরি কাজ হল, সমাজ-মনস্তাত্ত্বিকদের পরামর্শ নেওয়া; সেই মোতাবেক পদক্ষেপ করা। এবং
(২) বিজ্ঞান চেতনা, বাংলার প্রাচীন ইতিহাস, বাঙালির আত্মপরিচয়, স্বাধীনতা, শান্তি, সহনশীলতা বিষয়ক এবং দেশের অন্যান্য আর্থিক ও রাজনৈতিক গঠনমূলক বিষয়ে সাংস্কৃতিক আন্দোলন করা প্রতিটি উপজেলায়। বাংলাদেশ সুস্থ হয়ে উঠুক। একরাশ ভালোবাসা এবং শুভ কামনা রইল। মনের যত্ন নিন পরস্পর প্রতিদিন।

















